কাযা রোজা বলতে বুঝানো হয়েছে একটা রোজার বিপরীতে/ সঠিক সময় রোজা না রাখতে পারলে যে কয়টা রোজা রাখা হয় তাকে কাযা রোজার বলে।

কাযা রোজার নিয়ত টিক রমজানের রোজার নিয়তের মতই,  এটির কোন পরিবর্তন নেই। প্রত্যেক কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল” (বুখারী : ১)। নিয়ত মানেই হলো ইচ্ছে পোষন করা। আমি এই ভালো কাজটা করব এমনটায় হলো নিয়ত।

কাযা রোজার ফজিলত:

কাযা রোজার অনেক অনেক ফজিলত রয়েছে। কাযা রোজা রাখলে মহান আল্লাহ তাআ’লা অনেক খুশি হন। রোজা মানেই ফজিলত পূর্ণ আমাল। আল্লাহ তাআ’লা ছায় যাতে বন্ধা গুনাহ করবে এবং সেটা মাফ নেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। আল্লাহ তাআ’লা কাছে যা ছায়বেন সব কিছু দিবেন আল্লাহ তাআ’লা। নিয়ত ভালো হলেই সব কিছু পাবেন, মনের সকল আশা পূরণ হবে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখে, (অন্য বর্ণনায়) ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় তারাবির নামাজ পড়ে, তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। (বুখারি শরিফ: হাদিস নং ১৯০১)

 রোজা পালন উপলেক্ষ আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর সিয়াম বা রোজা ফরজ করা হয়েছে; যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল; যাতে তোমরা তাকওয়া (আত্মশুদ্ধি) অর্জনে করতে পার। (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৩)

হজরত আমর ইবনুল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমাদের রোজা এবং আহলে কিতাব তথা ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানদের রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সাহরি খাওয়া। (অর্থাৎ মুসলিমরা সাহরি খায় আর ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানরা সাহরি খায় না)।’ (মুসলিম, নাসাঈ)

আল্লাহ তাআ’লা রোজাকে ফরজ করেছেন। রোজা রাখা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি এর নিয়ত করাও তেমন গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র কুরআনে আল্লহপাক শুধুমাত্র একটি আয়াতে রোজার কথা বলেছেন। দ্বিতীয়বার এর পুনরাবৃত্তি করেননি। সূরা বাকারার ১৮৩ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন।

হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ হযরত মুহাম্মদ (সঃ)  বলেছেন, ‘প্রত্যেক বস্তুর জাকাত আছে, শরীরের জাকাত হচ্ছে রোজা।’ (ইবনে মাজাহ, মিশকাত)।

রাসুলুল্লাহ হযরত মুহাম্মদ (সঃ) রোজার ফজিলত সম্পর্কে আরও বলেছেন, ‘রোজা হচ্ছে ঢালস্বরূপ এবং জাহান্নাম থেকে বাঁচার সুদৃঢ় দূর্গ।’ (নাসায়ি)

কাযা রোজার নিয়ত সম্পর্কে আলোচনা :-

সেহরি খাওয়ার পড় থেকে দিনের শেষ ভাগে মনে মনে পড়লেই সেটা আদায় হয়ে যাবে। কাযা রোজার নিয়ত  ঠিক ফরজ রোজার মতই নিয়ত করলেই হবে। কাযা রোজার অনেক ফজিলত তু আছে। এই রোজা রাখলে আল্লাহ তাআ’লা সকল মুসলমানদের সকল গুনাহ থেকে মাফ করে দেয়।

কাযা রোজার নিয়ত বাংলা:

আমি আজ কাযা রোজা রাখার নিয়ত করলাম। এভাবে পড়লেই হয়ে যাবে। যারা আরবি পাড়েন তারা ঐটায় পড়ায় উত্তম।

নিয়ত মানে হলো কোন কাজ করার মন মানসিকতা তৈরি করাকে বুঝায়। নিয়ত শুধু মুখে বলতে হবে তা না,  মনে মনে বা ইচ্ছে করলেই আদায় হয়ে যাবে।  রোজার কোন সমস্যা হবে না।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখবে আল্লাহ তাআলা তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ১৯০১; তিরমিজি, হাদিস : ৬৮৩)

তিনি বলেন, ‘তোমারদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে- যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)

সকল রোজার জন্য টিক রমজানের রোজার নিয়ত পড়লেই হবেনিচে দেওয়া হলো:

রোজার আরবি নিয়ত:

نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم

রোজার নিয়তের বাংলা উচ্চারণ :

 নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম, মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাক; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।

রোজার নিয়তের বাংলা অর্থ :

 হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোযা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।

তাই আমরা জানতে পারলাম যে কাযা রোজার  নিয়ত ও তার ফজিলত সম্পর্কে । আল্লাহ তাআ’লা রোজাদার ব্যক্তির সকল গুনাহ মাপ করে এবং যা ছায় তা দেয়। রোজা রাখলে আল্লাহ তাআ’লা অনেক নেকি পাওয়া যায়। মাঝে মাঝে আমরা নফল রোজা রাখব আমিন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *