আশুরার রোজার নিয়ত টিক রমজানের রোজার নিয়তের মতই। আল্লাহ তাআ’লা এই আশুরার রোজার অনেক ফজিলত রয়েছে এবং অনেক বরকতময় দিন। আশুরার রোজার রাখা অনেক ফজিলত পূর্ণ রোজা। আল্লাহ তাআ’লা বলেছেন যে ব্যাক্তি এই আশুরার রোজা রাখবে সে ব্যাক্তির এক বছরের সগিরা গুনাহ মাপ করে দিবেন।

আশুরার রোজার ফজিলত:

আশুরা’ শব্দটি আরবি ‘আশারা’ শব্দ থেকে উৎপত্তি। আশারা অর্থ হচ্ছে দশ আর আশুরা অর্থ হল দশম দিবস। এই আশুরা রোজা নিয়ে মহান আল্লাহ তাআ’লা ও আমাদের প্রিয়নবী হযরত মোহাম্মদ সা: ও বলেছেন এই রোজা রাখার জন্য। এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ আমল। যা কোন ব্যাক্তির সারা বছরের গুনাহ মাফ করে দিবেন।

আশুরার পূর্বের দিন ৯ তারিখ বা পরের দিন ১১ তারিখ অতিরিক্ত একটি রোজা রাখা উত্তম যা হাদিসে এসেছে। রোজা রাখা অনেক ফজিলত পূর্ণ কাজ যা আল্লাহ তাআ’লা অনেক বেশি পছন্দ করেন।

আরবি মাসের হিজরি বর্ষের প্রথম মাস। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহর নিকট মর্যাদাপূর্ণ মাস। এ মাসের দশম তারিখও মহান আল্লাহর নিকট পূণ্যময়। যা আশুরার নামে পরিচিত। হযরত মোহাম্মদ সা: এই আশুরার রোজা রাখতে বলেছেন।

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রমজান মাসের রোজার পরে আল্লাহ তাআলার মাস মহররমের রোজাই সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৪০)।

হাদীসে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমি আশাবাদী যে, আশুরার রোজার কারণে আল্লাহ তায়ালা অতীতের এক বছরের (সগীরা) গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।’ (সহীহ মুসলিম ১/৩৬৭; জামে তিরমিযী ১/১৫৮)

আশুরার রোজা সম্পর্কে এক হাদীসে এসেছে যে, ‘তোমরা আশুরার রোজা রাখ এবং ইহুদিদের সাদৃশ্য পরিত্যাগ করে আশুরার আগে বা পরে আরো একদিন রোজা রাখ।’ (মুসনাদে আহমদ ১/২৪১)

হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আশুরার দিনের রোজার দ্বারা আমি আল্লাহর কাছে বিগত বছরের গুনাহ মাফের আশা রাখি।

’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৭৩৮)

ইবনে আব্বাস (রা.) একবার বললেন, হে আল্লাহর নবী! এ দিনটিকে ইহুদিরা সমীহ পূর্বক রোজা রাখে। আমাদের রোজাও তাদের সদৃশ হয়ে যায়। রাসূল (সা.) বললেন, যদি আমি আগামী বছর জীবিত থাকি, তবে নবম তারিখটিকেও দশমের সঙ্গে মিলিয়ে রোজা রাখব, ইনশাআল্লাহ’! পরের বৎসরটি আর আসেনি রাসূল (সা.) এর জীবনে।

আশুরার রোজার নিয়ত সম্পর্কে আলোচনা :

সেহরি খাওয়ার পড় থেকে দিনের শেষ ভাগে মনে মনে পড়লেই সেটা আদায় হয়ে যাবে। আশুরার রোজার নিয়ত  ঠিক ফরজ রোজার মতই নিয়ত করলেই হবে। আশুরার রোজার অনেক ফজিলত তু আছে। এই রোজা রাখলে আল্লাহ তাআ’লা সকল মুসলমানদের সকল গুনাহ থেকে মাফ করে দেয়।

আশুরার রোজার নিয়ত বাংলা:

আমি আজ আশুরার রোজা রাখার নিয়ত করলাম। এভাবে পড়লেই হয়ে যাবে। যারা আরবি পাড়েন তারা ঐটায় পড়ায় উত্তম।

নিয়ত মানে হলো কোন কাজ করার মন মানসিকতা তৈরি করাকে বুঝায়। নিয়ত শুধু মুখে বলতে হবে তা না,  মনে মনে বা ইচ্ছে করলেই আদায় হয়ে যাবে।  রোজার কোন সমস্যা হবে না।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা পাশাপাশি আশুরার রোজা রাখবে আল্লাহ তাআলা তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ১৯০১; তিরমিজি, হাদিস : ৬৮৩)

তিনি বলেন, ‘তোমারদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে- যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)

রোজার আরবি নিয়ত:

نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم

রোজার নিয়তের বাংলা উচ্চারণ :

 নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম, মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাক; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।

রোজার নিয়তের বাংলা অর্থ :

 হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোযা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।

আশুরার রোজা রাখা অনেক ফজিলত। যা রমজানের রোজার পরেই এর ফজিলত। আমরা চেষ্টা করব যে আশুরার রোজা রাখার আমিন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *